
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মুজিববর্ষে গৃহহীন-ভূমিহীনদের ঘর উপহার বাংলাদেশের মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় উৎসব। আজ শনিবার ৬৬ হাজার ১৮৯টি গৃহহীন পরিবারের হাতে ঘরের চাবি বুঝিয়ে দিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আজকে এটাই সবচেয়ে বড় উৎসব, এর চেয়ে বড় উৎসব বাংলাদেশের মানুষের হতে পারে না। ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এসব পরিবারকে ঘরের চবি বুঝিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। এই অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন ৪৯২টি উপজেলার মানুষ। তিনি বলেন, যখন এই মানুষগুলো এই ঘরে থাকবে তখন আমার বাবা-মার আত্মা শান্তি পাবে। লাখো শহীদের আত্মা শান্তি পাবে। কারণ এসব দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই তো ছিল আমার বাবার লক্ষ্য।
সরকার প্রধান বলেন, খুব আকাঙ্ক্ষা ছিল নিজে আপনাদের হাতে জমির দলিল তুলে দিই। কিন্তু করোনাভাইরাসের জন্য হল না। তারপরও আমি মনে করি, দেশ ডিজিটাল হয়েছে বলেই এভাবে উপস্থিত হতে পেরেছি। আমরা প্রত্যেক শ্রেণির জন্য কাজ করছি। সব মানুষকেই জন্য ঠিকানা করে দেব, এটাই আমার লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক দিনে এত মানুষকে ঘর দিতে পারলাম, এটাই সবচেয়ে বড় পাওয়া। মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তি এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহারা থাকবে না। যাদের গৃহ নেই তাদের ঘর করে দিতে পারা অসাধ্য সাধন করতে পারলাম, এর চেয়ে বড় পাওয়া আর হতে পারে না। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে যুক্ত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি সকলের সম্মিলিত প্রয়াসেই এত বড় অসাধ্য সাধন হয়েছে। প্রশাসন যারা আছেন, তারা সরাসরি কাজগুলো করেছেন বলে এত দ্রুত হয়েছে। এত অল্প সময়ে এত ঘর করে দেয়া সম্ভব হয়েছে। সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করেছেনবিশ্বে একসাথে এত মানুষকে ঘর দেয়া নজিরবিহীন।
শেখ হাসিনার পছন্দ করা নকশায় নির্মাণ করা হয়েছে এই প্রকল্পের বাড়ি। প্রতিটি ঘরে থাকছে দুটি শয়ন কক্ষ, একটি লম্বা বারান্দা, একটি রান্নাঘর ও একটি টয়লেট। এসব ঘরের জন্য নিশ্চিত করা হয়েছে বিদ্যুৎ ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা। পরিবারগুলোর কর্মসংস্থানেরও উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তারা শুধু ঘর নয়, সাথে পাচ্ছেন ভূমির মালিকানাও। প্রত্যেককে তার জমি ও ঘরের দলিল নিবন্ধন ও নামজারিও করে দেয়া হচ্ছে। দেশের ৫০ বছরের ইতিহাসে এর আগে এত মানুষকে এক দিনে সরকারি ঘর হস্তান্তর করা হয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, বিশ্বে এর আগে এক দিনে এত বেশি ঘর বিনামূল্যে হস্তান্তর করা হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আশ্রয়ণের সাথে বেদে দলিত হিজড়াদের ঘর করে করে দিয়েছি। উদ্বোধন শেষে তিনি বিভিন্ন জেলায় উপকারভোগীদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন। এ সময় জানানো হয়, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে এই ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত মুজিববর্ষে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন ঘোষণার ধারাবাহিকতায় পৌনে ৯ লাখ গৃহহীন-ভূমিহীন পরিবারের মধ্যে প্রথমে ৬৬ হাজার ১৮৯টিকে ঘরের মালিকানা দেয়া হল।
এবিএনওয়ার্ল্ড/এমআর