
নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে কার্গো জাহাজের ধাক্কায় অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে লঞ্চডুবির ঘটনায় এ পর্যন্ত ৬ নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ১৫ জনের মতো নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া রবিবার রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত অন্তত: ১৫ জনের মত নিখোঁজ রয়েছে। নিখোঁজ হওয়া ৭ জনের নাম পরিচয় জানিয়েছে তাদের স্বজনরা। এদের বয়স ২৫ থেকে ৪০ মধ্যে বলে জানা গেছে। উদ্ধারের পর লাশগুলি নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে নেয়া হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে উদ্ধারকর্মীরা। লঞ্চডুবির খবর পেয়ে যাত্রীদের স্বজনরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তাদের আহাজারিতে সেখানকার বাতাস ভারী হয়ে উঠে। এদিকে লঞ্চডুবির ঘটনা তদন্তে বিআইডব্লিউটিএ এর পরিচালককে প্রধান করে ৪ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের নারায়ণগঞ্জের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফীন জানান, ৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টির কারণে উদ্ধার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। তবে আমাদের কার্যক্রম চলছে। গতকাল রবিবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে সদর উপজেলার চর সৈয়দপুর এলাকায় একটি কার্গো জাহাজের ধাক্কায় এসকে-৩ রাবিত আল হাসান নামে লঞ্চটি অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে যায়। লঞ্চটি নারায়ণগঞ্জ থেকে সন্ধ্যা ৬টায় মুন্সীগঞ্জ যাওয়ার পথে সোয়া ৬টায় অপর একটি কর্গোর ধাক্কায় নদীতে নিমজ্জিত হয়।
নারায়ণগঞ্জ নৌ-থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শহিদুল আলম জানান, রাবিত আল হাসান নামে যাত্রীবাহী লঞ্চ ডুবির ঘটনা ঘটে। চরসৈয়দপুর এলাকায় শীতলক্ষ্যায় নির্মাণাধীন সেতুর কাছাকাছি স্থানে একটি লাইটার জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চটি ডুবে যায়। ডুবে যাওয়া লঞ্চটির মালিকের নাম আলাল হোসেন।
নদীবন্দর নারায়ণগঞ্জের উপ-পরিচালক মোবারক হোসেন জানান, ৪৩ জন যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি মুন্সীগঞ্জের দিকে রওয়ানা হয়। চরসৈয়দপুর এলাকায় শীতলক্ষ্যায় নির্মাণাধীন সেতুর কাছাকাছি স্থানে অপর একটি জাহাজের ধাক্কায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। ঘটনাস্থলে পুলিশ, নৌ পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার অভিযানে নেমেছে। কালবৈশাখী ঝড় ও বৈরি আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার অভিযান কিছুটা বিঘ্ন ঘটছে।
লঞ্চের যাত্রী মুন্সিগঞ্জে দিপু জানান জানান, বড় একটি জাহাজের সাথে ধাক্কা লেগে লঞ্চটি ডুবে যায়। তিনি সাতরে তীরে ফিরতে পেরেছেন। লঞ্চটিতে আনুমানিক ৫০/৬০ জন যাত্রী ছিল।
ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের মিডিয়া সেল কর্মকর্তা মো. রায়হান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ডুবে যাওয়া লঞ্চটি ও নিখোঁজ যাত্রীদের উদ্ধারে কাজ করছে উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যেয়, নৌপুলিশ, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
মুক্তারপুর নৌ স্টেশনের ইনচার্জ কবির হোসেন জানান, লঞ্চটিতে ধারণ ক্ষমতার অনেক বেশি যাত্রী ছিলেন।
এবিএনওয়ার্ল্ড/এফআর