
টমেটো একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর সবজি। টমেটো শীতকালীন সবজি হলেও এখন সারা বছর পাওয়া যায়। কাঁচা কিংবা পাকা দুভাবে টমেটো খাওয়া যায়। খাবারের স্বাদ বাড়াতে টমেটোর জুড়ি মেলা ভার। অনেকে আবার সালাদে টমেটো খেয়ে থাকেন। শুধু খাবারে স্বাদই বাড়ায় না, টমেটো থেকে তৈরি হয় নানা রকমের কেচাপ, সস।
টমেটোতে রয়েছে পুষ্টি উপাদান যা আমাদের দেহের জন্য খুব প্রয়োজনীয়। সুস্বাদু ও পুষ্টির জন্য গোটা বিশ্বেই টমেটো সমাদৃত। এতে রয়েছে ভিটামিন এবিসিকে, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, লাইকোপিন ও ক্রোমিয়াম।
গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, টমেটোতে থাকা উচ্চমানের লাইকোপিন প্রস্টেট, কোলন ও পাকস্থলির ক্যানসারের সেল তৈরি হতে দেয় না। লাইকোপিন হচ্ছে এক প্রকার প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা ক্যান্সারের সেল তৈরিতে বাধা দেয়।
একনজরে দেখে নিন, টমেটোর উপকারিতা:
সুস্থ ত্বক: টমেটো হচ্ছে উচ্চ লাইকোপিন সমৃদ্ধ, এটি ত্বকের ভালো ক্লিনজার হিসেবে কাজ করে। টমেটো থেঁতো করে ক্লিনজার হিসেবে ব্যবহারের প্রচলন অনেক দিনের। এটা থেঁতো করে মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। রোদে পোড়া ভাব, বলিরেখা ও চোখের নিচে কালো দাগ দূর করতে বিশেষজ্ঞরা টমেটো ব্যবহারের কথা বলেন।
হৃদপিণ্ডের ভালো বন্ধু: টমেটোতে ভিটামিন-বি ও পটাশিয়াম থাকায় এটি কোলেস্টেরল ও অতিরিক্ত রক্তচাপ কমায়। টমেটোর জুস খেয়ে সহজেই হার্ট অ্যাটাক ও অন্যান্য হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারেন।
মজবুত হাড়: তুলতুলে নরম এ ফলটি (সবজি হিসেবে ব্যবহৃত হয়) মজবুত হাড় গঠনে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন কে। আর এ দুটি উপাদানই শক্ত হাড় গঠন ও টিস্যুর পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মানেই টমেটো: টমেটোতে রয়েছে পর্যাপ্ত ভিটামিন-এ ও ভিটামিন সি। এসব ভিটামিন ও বিটা ক্যারোটিন রক্তে জমা হওয়া সব টক্সিনকে শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে সহায়তা করে।
কিডনির সুরক্ষায়: টমেটোর সালাদ নিয়মিত খেলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ভয় থাকবে না।
১. টমেটোতে থাকা পটাশিয়াম স্ট্রোক ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। লাইকোপেন নামক উপাদান কোলেস্টেরলও কমায়।
২. টমেটোতে ক্যারোটিন লাইকোপেন, লুটিন ও বিটা ক্যারোটিন নামক বেশ কিছু ফাইটো কেমিক্যাল থাকে, যা চোখের জন্য খুবই উপকারী।
৩. টমেটোতে থাকা ক্যারোটিনয়েডস চামড়ার সুরক্ষায় খুবই উপকারী। এটি অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাব থেকে রক্ষা করে।
৪. ক্ষত সারাতে ও রক্ত জমাট বাঁধতে টমেটো খুব ভালো কাজ করে।
৫. অতিরিক্ত উত্তেজনা, অস্থিরতা, উচ্চ রক্তচাপ প্রভৃতি কমাতে সাহায্য করে।
৬. টমেটো ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
৭. টমেটোতে থাকা ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম হাড় শক্ত ও মজবুত করে।
৮. টমেটোতে থাকা ভিটামিন সি ঠাণ্ডা, জ্বর, কাশি দূর করে।
ভালো দৃষ্টিশক্তি: ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ হওয়ায় টমেটো দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে। যাদের রাতকানা রোগ রয়েছে তাদের জন্য টমেটো ভালো ওষুধ।
প্রতি এক কাপ টমেটো কুচিতে রয়েছে– ১৭০.১৪ গ্রাম পানি, ১.৫৮ গ্রাম প্রোটিন, ২.২ গ্রাম আঁশ, ৫.৮ গ্রাম শর্করা, ০ গ্রাম কোলেস্টেরল, ০.৩২ গ্রাম ক্যালোরি, ১৮ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৪২৭ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, ৪৩মিলিগ্রাম ফসফরাস, ২৪.৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি ও ভিটামিন- এ।
এবিএনওয়ার্ল্ড/এফআর